২০১০ সালের এসএ গেমস সাফল্যের পর যেভাবে বিস্তৃত হওয়ার কথা ছিল, সেভাবে হয়নি খেলাটি। ২০১৬ সালের শিলং গৌহাটিতে একটি মাত্র ব্রোঞ্জ জিতেছিল বাংলাদেশ। যে কয় বছরে উশু নিয়ন্তাদের স্বেচ্ছাচারিতায় দিন দিন পিছিয়েছে খেলাটি। এই ৯ বছরে ফেডারেশন কর্মকর্তাদের মাঝেও চলছে রেষারেষি। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের ১১ই অক্টোবর বাংলাদেশ উশু এসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির সভায় হিসাব-নিকাষের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সততা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
অর্থ উত্তোলনে যে চেকগুলো ব্যবহার করা হয়েছে, তার কোনোটিতে কোষাধ্যক্ষর স্বাক্ষর ছিল না। যা সরাসরি গঠনতন্ত্রের লঙ্ঘন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া ২০১৭ সালে চারটি খাতে ৬ লাখ ৫১ হাজার ১৫০ টাকা আয় করেছে বাংলাদেশ উশু এসোসিয়েশন। নগদ বিংবা চেকে প্রাপ্ত অর্থ স্বচ্ছতা রক্ষার্থে ফেডারেশনের ব্যাংক হিসেবে জমা হওয়ার কথা। কিন্তু ৬ লাখ ৫১ হাজার ১৫০ টাকার কোনো হদিস নেই বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া তিন অফিস স্টাফের বেতন বাবদ ব্যয় দেখানো হয়েছে ২ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে তিন স্টাফের বেতন প্রদানে যে ভাউচার দেয়া হয়েছে তা সদ্য প্রস্তুত ও অসঙ্গতিপূর্ণ। এছাড়া তৃণমূল পর্যায়ে খেলোয়াড় বাছাই কার্যক্রমের বিল ভাউচারে উল্লিখিত অর্থের সঙ্গে অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়দের জবানবন্দিতে নানা অসঙ্গতি খুঁজে পায় তদন্ত কিমিটি।
এসব অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে চলতি বছরের ৩রা ফেব্রুয়ারি যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের কাছে অভিযোগপত্র দিয়েছেন ফেডারেশনের প্রথম যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল আলম রোমান। এর প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ৬ই মে তৎকালীন ক্রীড়া পরিচালক শাহ আলম সরদারকে প্রধান করে উশু দুর্নীতি তদন্তে কমিটি গঠন করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। তারা দফায় দফায় দুই পক্ষের সঙ্গে কথাও বলেছে। তবে চূড়ান্ত রিপোর্ট এখনও দেয়নি সংস্থাটি।
যে কমিটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে ওই কমিটির যুগ্ম সম্পাদক দুলাল হোসেন বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক। ওই কমিটির সধারণ সম্পাদক আলমগীর শাহ ভূঁইয়া বর্তমান কমিটির সহসভাপতি, দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত কমিটির সহসভাপতি কামাল হোসেন বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর তারা আবার বিষয়টিকে দেখছেন চক্রান্ত হিসেবে। দুলাল হোসেন প্রশ্ন তোলেন অ্যাডভোকেট মো. মোতাহার হোসেন সাজুর তদন্তের বৈধতা নিয়ে। তার মতে ফেডারেশন কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করেনি। করেছিল একটা অডিট কমিটি। একটা চক্র ওটাকে তদন্ত কমিটি বলে চালিয়ে দিয়েছে। ফেডারেশনের অর্থ ব্যক্তিগত একাউন্টে নেয়ার অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, বিষয়টা তেমন না। আমাদের তো চামরার মুখ। যার যা ইচ্ছা তা বলতে পারেন। উশু ফেডারেশনের অতীতের কথা সামনে টেনে এনে দুলাল হোসেন বলেন, অতীতে কারা কিভাবে চালিয়েছেন তা জানি না। ২০০৭ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত যারা চালিয়েছে তার কোনো হিসাব নেই। চীন সরকার আমাদের যে সরঞ্জাম দিয়েছে, তার কোনো হদিস নেই। আমাদের বর্তমান কার্যক্রম স্বচ্ছতার সঙ্গেই চলছে। একটা চক্র এখানে জটিলতা সৃষ্টি করেছিল। আমাদের সভাপতি ওই ব্যক্তিদের ছেঁটে ফেলে যারা প্রকৃত কাজের লোক, তাদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠন করেছেন। হাতে গোনা দুয়েকজন ব্যক্তি বাইরে থেকে এসব করছেন। একই কথা বললেন আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর শাহ ভূঁইয়া। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ব্যাপারে বলেন, কোষাধ্যক্ষকে না জানিয়ে টাকা উঠানোর কোনো সুযোগ নেই। তারা যা বলছে এসব মিথ্যা বানোয়াট। আমাদের সাধারণ সম্পাদক দুলাল হোসেনের কাছে এসবের প্রমাণ আছে। আপনারা চাইলে এসব ফেডারেশনে এসে দেখতে পারেন।
অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে উশু যে আগের অবস্থানে নেই সেটা জানিয়েছেন খেলোয়াড়রা। তারা সন্দিহান আসন্ন এসএ গেমসে ফলাফল নিয়েও।
‘এমপি আনার হত্যা: ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের আরও নেতা নজরদারিতে’
প্রতিষ্ঠাতা: প্রহর ডেস্ক ।। সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়......বিস্তারিত