স্টাফ রিপোর্টার !! অফিস করে নিজের ইচ্ছে মাফিক । সবই চলে তার মন মর্জিতে । কাওকে তোয়াক্কা করেন না তিনি । পুত্রবধূ পুলিশের এএসপি, মেয়ে ডাক্তার, ছেলে কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা, স্বামী সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ।
এতসব কাছের অর্থাৎ পরিবারের মানুষ তার ! তিনি কেনই বা কাউকে পরোয়া করবেন ? তিনি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর জেসমিন সুলতানা । তার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে । ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে ২০০১ইং সাল থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত তিনি স্যানিটারী ইন্সপেক্টর হিসাবে কর্মরত থেকে সংশ্লিষ্টদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন ।
যে কারণে ত্রিশালে সরকারের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত কার্যক্রম ভেস্তে যেতে বসেছে । অভিযোগ রয়েছে, ত্রিশালের সর্বত্রই সকল ছোট-বড় খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, নিম্নমানের ও মান বহির্ভূত খাদ্যপণ্য তৈরি করলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি এই কর্মকর্তা । এক্ষেত্রে তিনি আইনি ফাঁক-ফোকর দেখিয়ে সুবিধা নিয়েছেন ।
ত্রিশালের সর্বত্র মানহীন খাদ্যপণ্য উৎপাদক, বিক্রেতারা জনসাধারণকে দিন দিন ধোঁকা দিলেও স্যানিটারী ইন্সপেক্টর জেসমিন সুলতানার কোনো মাথাব্যথা পরিলক্ষিত হয় না । ত্রিশালে নেই নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ এর কোন প্রয়োগও ।
মাঝে মধ্যে ত্রিশালে লোক দেখানো অভিযান পরিচালিত হলেও খাদ্যের নমুনা পরীক্ষায় দীর্ঘসূত্রিতা দেখিয়ে তা অঙ্কুরেই ধামাচাপা দেয়া হয় । খাদ্যপ্রস্তুতকারী রেস্তোরাঁ বা বেকারি ও খুচরা বিক্রেতা পরিদর্শনকালে স্যানিটারি ইন্সপেক্টরর জেসমিন সুলতানা মোটা অংকের টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন বলেও অভিযোগ উঠেছে ।
এক্ষেত্রে খাদ্য কারখানা পরিদর্শনে খাদ্যপণ্যের নমুনা সংগ্রহে ঘুষের বিনিময়ে বিএসটিআই’র ফিল্ড অফিসারদের শৈথিল্য প্রদর্শন (ক্ষেত্রভেদে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ও ফিল্ড অফিসারগণ মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়ে থাকেন ।
মাসিক ঘুষের বিনিময়ে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর জেসমিন সুলতানা কর্তৃক ত্রিশালের বড় দোকানদার, রেস্তোরা ও বেকারির মালিকের সাথে সমঝোতামূলক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে । অভিযোগ, তিনি আইনের ভয় দেখিয়ে মূল্য পরিশোধ না করে নমুনা সংগ্রহ এবং ব্যক্তিগত ভোগে ব্যবহার, পরিদর্শন কার্যক্রমে নিজ উদ্যোগে সোর্স নিয়োগ এবং সোর্সদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা প্রদানের খরচও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে নিয়মবহির্ভূতভাবে আদায় করে থাকেন ।
অভিযোগ রয়েছে, জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরীক্ষাগার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর জেসমিন সুলতানার যোগসাজসে ও নমুনা পরীক্ষা না করে ঘুষ ও উপঢৌকনের বিনিময়ে সনদ প্রদান করে থাকেন ।
ত্রিশাল উপজেলা শহরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারের বেকারী,মিষ্টান্ন ভান্ডার ও খাবারের হোটেল মালিকদের অভিযোগ, বছরের পর বছর বিভিন্ন দোকান থেকে নেয়া উৎকোচের টাকায় জেসমিন সুলতানা একাধিক বাড়ি মালিক হয়েছেন । খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনিসহ এই কর্মকর্তার পরিবারের লোকজন জামায়াত সমর্থিত ।
তারপরও কিভাবে ? অভিযোগের অন্তহীন পাহাড় নিয়ে দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে একই উপজেলায় কর্মরত রয়েছেন । এ প্রশ্ন জেলার সর্বত্র । সংবাদপত্রে তার দুর্নীতি অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর ত্রিশালবাসী আশা করেছিল জেসমিন সুলতানা কড়া ব্যবস্থা নেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ । তা কিন্তু হয়নি। উল্টো স্বপদে বহাল থাকায় তার প্রতি প্রশাসনের সমীহ আরও বেড়ে গেল।
ভুক্তভোগীরা বলেন, এরপর থেকে জেসমিন সুলতানার ঘুষের প্রতি লোভাতুর দৃষ্টি ফেলতে ফেলতেই দিনাতিপাত করছেন। অভিযোগ রয়েছে, ত্রিশালের লোকজন জেসমিন সুলতানার দাপটে দিশাহারা। ত্যক্ত-বিরক্ত তারই উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ।
প্রতিবাদকারীদের সম্পর্কিত তার কথাবার্তা বেশ উপভোগ্য। বলে বেড়ান , আই ডোন্ট কেয়ার । এ বিষয়ে ত্রিশাল উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর জেসমিন সুলতানা বলেন, আমি কোন সাংবাদিকের সাথে কথা বলবো না, আমার পুত্রবধূ পুলিশের এএসপি,মেয়ে ডাক্তার,ছেলে ব্যাংক কর্মকর্তা কত বড় সাহস সাংবাদিক আমার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করে ? আমি মামলা করেছি আদালতে বিচার হবে ।
‘ঘুষ দুর্নীতির প্রমান পেলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না —বিভাগীয় কমিশনার আমিন উল আহসান’
প্রতিষ্ঠাতা: আল আমিন,বাবুগঞ্জ(বরিশাল)প্রতিনিধি ॥ বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের সকল দপ্তরের কর্মকর্তা-......বিস্তারিত