বাবুগঞ্জ(বরিশাল)প্রতিনিধি :: বরিশালের বাবুগঞ্জে ম্যানেজিং কমিটির (এডহক) সভাপতি সুজন আহমেদের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দিয়ে পদত্যাগ করেছেন কমিটির দুই সদস্য। সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার সপ্তাহের মাথায় সোমবার তারা দুজন পৃথকভাবে পদত্যাগপত্র প্রধান শিক্ষকের নিকট জমা দেন। ঘটনাটি ঘটেছে বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়নের বাহেরচর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। পদত্যাগ করা সদস্যদের দাবি সদস্য সভাপতি ঘোষণা করা সুজন আহমেদ অপ্রাপ্ত বয়স্ক, অযোগ্য এবং বিতর্কিত লোক। অভিভাবকদের মতের বাইরে গিয়ে বোর্ড কর্তৃপক্ষ তাকে সভাপতি মনোনিত করেছে। এ কারণে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুল থেকে নিয়ে যেতে টিসি চাচ্ছে। তাই বোর্ড চেয়ারম্যানের পরামর্শে শিক্ষার পরিবেশ এবং বিদ্যালয়ের স্বার্থে তারা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন। জানা গেছে, ‘বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়নের বাহেরচর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় আগামী ছয় মাসের জন্য এডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচনের লক্ষ্যে বিদ্যালয় কর্তৃক ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সুপারিশ পাঠানো হয় বরিশাল শিক্ষাবোর্ডে। সেখানে সুজন আহমেদ নামে কোন সদস্যের নাম অন্তভূক্ত ছিলো না। শিক্ষার্থী অভিভাবকদের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে প্রস্তাবিত তালিকার বাইরে কমিটি দিয়েছে শিক্ষা বোর্ড। এমনকি যাকে সভাপতি করা হয়েছে তিনি বিদ্যালয়ের অভিভাবক বা কোনভাবেই সংশ্লিষ্ট নন। তাই এ নিয়ে শিক্ষার্থী অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এর সূত্র ধরে কমিটি গঠনের বিষয়টি প্রকাশ ফেলে অভিভাবক ও স্থানীয়রা বাহেরচর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেন। তারা সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে গণস্বাক্ষর করেন। পরবর্তীতে অভিভাবক এবং বিদ্যালয়ের ওপর অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করলে সুজন আহমেদ ও তার ভাইকে সম্প্রতি জনসম্মুখে লাঞ্চিত করেন অভিভাবক এবং এলাকাবাসী। তবে বিষয়টি রাজনৈতিকখাতে প্রভাবিত করতে সুজন বাবুগঞ্জ থানা এবং প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দারে দারে ঘুরেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এদিকে, ‘অভিভাবকদের বাধার পরেও এডহক কমিটি থেকে পদত্যাগ না করায় সুজন আহমেদের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে সোমবার কমিটির অভিভাবক সদস্য মো. আলমগীর হোসেন এবং শিক্ষক প্রতিনিধি মো. বজলুর রহমান খান প্রধান শিক্ষক বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। অভিভাবক সদস্য মো. আলমগীর হোসেন জানান, ‘সুজন আহমেদ অবিবাহিত, স্কুলে তার কোন সন্তান লেখাপড়া করে না। তিনি স্কুলের দাতাও নন। তাছাড়া আমরা শুনেছি সুজনের বাবা সুদ ব্যবসার সাথে জড়িত। এমন একজন লোককে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি করায় অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তারা তাদের সন্তানদের অন্য স্কুলে ভর্তির জন্য টিসি চাইছেন। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার পরিবেশ এবং বিদ্যালয়ের স্বার্থে কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে জানান তিনি। এই সদস্য আরও বলেন, ‘অভিভাবকদের বিষয়টি নিয়ে আমরা বরিশাল শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, এই কমিটি বাতিলের সুযোগ নেই। তবে কমিটির অভিভাবক সদস্য এবং শিক্ষক প্রতিনিধি পদত্যাগ করলে পূর্ণ কমিটি ভেঙে দেয়া হবে। তাই বোর্ডে চেয়ারম্যানের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা পদত্যাগ করেছি। শিক্ষক প্রতিনিধি মো. বজলুর রহমান খান বলেন, ‘আমি শিক্ষকদের প্রতিনিধি। তাই শিক্ষকদের সিদ্ধান্তে স্কুলের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়ের স্বার্থে আমি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সচিব মো. ইউসুফ আলী বলেন, ‘পদত্যাগপত্র পেয়েছি। অভিভাবক সদস্য এবং শিক্ষক প্রতিনিধি বোর্ড চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষেই নাকি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি তাদের পদত্যাগপত্র বোর্ড চেয়ারম্যান বরাবর প্রেরণ করেছি। এ বিষয়ে বোর্ড কর্তৃপক্ষ পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সুজন আহমেদ বলেন, ‘আমি বোর্ডের নিয়ম মেনেই সভাপতি হয়েছি। সদস্যরা পদত্যাগ করে থাকলে সে বিষয়ে বোর্ড কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিবেন।
‘এমপি আনার হত্যা: ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের আরও নেতা নজরদারিতে’
প্রতিষ্ঠাতা: প্রহর ডেস্ক ।। সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়......বিস্তারিত