DailyBarishalerProhor.Com | logo

২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বরিশাল সিটির প্রবেশদ্বারে মাঝিমাল্লা চক্র, হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা

প্রকাশিত : অক্টোবর ২৭, ২০২০, ২২:৩৯

বরিশাল সিটির প্রবেশদ্বারে মাঝিমাল্লা চক্র, হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা

মাসুদ রানা, বিশেষ প্রতিবেদক>>
কীর্তনখোলা নদী পাড়ি দিয়ে বরিশাল সিটি শহরে প্রতিদিন আসা-যাওয়া করা অর্ধলাখ মানুষ’র কাছ থেকে একদল মাঝি-মাল্লা চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। বিআইডব্লিউটি’র ইজারামুক্ত এ ঘাটটি পারাপারে জন প্রতি ২টাকা নেয়ার নির্দেশনা থাকলেও ৫টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। দুর্ভোগ থাকা যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে প্রতিবাদ করলে ভয়ার্ত রুপে হামলে পড়েন মাঝি মল্লারা।

এদিকে, খেয়া পারাপারের নৌকা ও ট্রলার আবার স্থানীয় ক্ষমতাধর ও প্রশাসনের অসাধু একাদিক কর্মকর্তার নামে কোঠা পদ্ধতিতে চলাচল করে। দিন শেষে কোঠা মালিকরা মাঝিদের কাছ থেকে অবৈধ টাকার ভাগ নিচ্ছে। তাই খেয়াঘাটকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে শক্তিধর মাঝিমাল্লা চক্র। এসবের অন্তরালে বরিশাল সদর উপজেলা চরকাউয়া ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ছবি ও তার আপন ভাই জেলা পরিষদ সদস্য মুনাওয়াল ইসলাম অলি নিয়ন্ত্রন করছেন বলে জানিয়েছেন মাঝি মাল্লা কমিটির সাধারন সম্পাদক সজীব হোসেন।

জেলা পরিষদ সদস্য মুনাওয়াল ইসলাম অলি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, আমরা জনগনকে নিয়ে ওদের জুলুমের বিরুদ্ধে কথা বলি বলে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ধুয়া ছড়াচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বরিশাল সিটি এলাকার অন্যতম প্রবেশদ্বার নগরীর চরকাউয়া খেয়াঘাট। ঘাটের একপার সিটি কর্পোরেশনের ৯ ও ১০ নং ওয়ার্ড’র কোল ঘেঁষে বয়ে যাওয়া কীর্তনখোলা নদীর এ স্থানটিতে দাঁড়ালে দেখা যাবে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে হাজার হাজার যাত্রী নদী পাড়ি দিচ্ছে। এক দল আসছে নগরীর দিকে, অন্য দল নগরী ছেড়ে যাচ্ছে পূর্ব পাড় সদর উপজেলার চরকাউয়ায়।

খেয়ার মাঝিদের তথ্যমতে, প্রতিদিন কমপক্ষে অর্ধলাখ মানুষ কীর্তনখোলা পাড়ি দিয়ে নগরীতে আসা-যাওয়া করে। শত বছরের পুরোনো চরকাউয়ার এ খেয়া-ঘাটটি দিয়ে বরিশাল সদর উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন, বাকেরগঞ্জ উপজেলা, ভোলা জেলা এবং পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বাসিন্দাদের বরিশাল বিভাগীয় ও সিটি শহর আসতে সহজ পথ। এ কারনে খেয়াঘাটে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা যাত্রী পারাপার হয়। যাত্রী পারাপার সহজলভ্য করতে তৎকালীন মেয়র ও বিআইডব্লিউটিএ এ খেয়াঘাট ইজারা মুক্ত করে দেন। সেসময় নির্ধারন করে দেওয়া হয় যাত্রী প্রতি দুই টাকা হারে খেয়া পার হবে। কিন্তু করোনা অজুহাত দেখিয়ে লকডানের সময় ৫টাকা ভাড়া নেওয়া শুরু করে মাঝি মাল্লারা। লকডাউন শেষ হলেও কেন ২ টাকার ভাড়া ৫টাকা করে নেওয়া হয় এনিয়ে প্রতিদিন যাত্রীদের সঙ্গে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকে চড়কাউয়া খেয়াঘাটে। প্রায় সময়ই হামলার শিকার হন যাত্রীরা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, দুটি চক্র নিয়ন্ত্রন করে খেয়াঘাট। একটি চক্র হচ্ছে, যাত্রী পারাপারে যে ট্রলার বা নৌকা ব্যবহৃত হয় তা কোঠা পদ্বতিতে বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের নামে। মাঝি মাল্লারা রাত-দিন নৌকা চালিয়ে কোঠার মালিকদের হাতে ৩শ টাকা করে দিতে বাধ্য থাকেন। তার ওপর ক্ষমতাধরদের তো প্রতিনিয়ত বখরা চালিয়ে যেতে হয়। অপর চক্রটি হচ্ছে মাঝি মাল্লা চক্র। তারাও অতি মুনাফার আশায় কোঠা মালিকদের আস্ফলনে ৫টাকা করে ভাড়া আদায় বন্ধ করছে না যাত্রীদের কাছ থেকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে খেয়াঘাটে ১০৫টি নৌকার কোঠা আছে। মাঝিদের ভাষ্যানুযায়ী, প্রতিদিন তারা এপার ওপার মিলিয়ে একেকটি নৌকা অন্তত ৬০টি ট্রিপ দেয়। প্রতি ট্রিপে ১০জন করে ৫টাকা হারে দিন রাত ১০৫টি নৌকায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩লাখ টাকা করে আদায় হয়। এর মধ্যে শুধু মাত্র প্রতিটি নৌকায় তেল খরচ হয় সর্বোচ্চ ২শত টাকা করে। বাকী টাকা ভাগাভাগি হয় কোঠা মালিক ও মাঝি মাল্লা চক্রের মধ্যে।

মাঝি মাল্লা সমিতির সাধারন সম্পাদক সজীব হোসেন কোঠা পদ্ধতি ও ভাড়া বেশি নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ঘাটের সমস্যার সমাধান চরকাউয়া ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ছবি ও তার ভাই জেলা পরিষদ সদস্য মুনাওয়াল ইসলাম অলি ভাই দিতে পারবেন। এর বাইরে আমার কিছু বলার নেই।

অপরদিকে, জেলা পরিষদ সদস্য মুনাওয়াল ইসলাম অলি এ প্রতিবেদককে জানান, আমি সদর উপজেলা পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন পরিষদের সভাপতির দায়িত্বে আছি। আমি প্রকৃত মাঝিদের বাদ দিয়ে কোঠা পদ্ধতিতে নৌকা চালানোর বিরোধিতা করায় আমার ওপর এ অনিয়মের দায় চাপানো হচ্ছে। আর অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে তিনি এ সপ্তাহে সিদ্ধান্ত নিবেন বলেও এ প্রতিবেদককে জানান।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয় প্রধান কার্যালয়

মারীয়া কমপ্লেক্স, কাশিপুর বাজার, বরিশাল ।

মোবাইলঃ ০১৭১৬৬০৫৯৭১, ০১৫১১০৩৬৮০৯,০১৯১১১৭০৮৮৪

মেইলঃ barishalerprohor.news.bd@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ
Web Design & Developed By
ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্ক

প্রতিষ্ঠাতা :
মোঃ নাছিম শরীফ


উপদেষ্টা: খালিদ মাহমুদ

মেইলঃ barishaler.prohor@yahoo.com
  • মোবাইলঃ ০১৭১১০৩৬৮০৯, ০১৯১৯০৩৬৮০৯
    • সম্পাদক ও প্রকাশক : নাজমুন নাহার
    • ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ মোঃ রাসেল আকন
    • নির্বাহী সম্পাদক: কাজী সজল
    • বার্তা প্রধানঃ মোঃ আল আমিন হোসেন
    ডেইলি বরিশালের প্রহর কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।