DailyBarishalerProhor.Com | logo

২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম শেখ হাসিনা

প্রকাশিত : জানুয়ারি ০৩, ২০১৯, ১৫:৩১

বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম শেখ হাসিনা

ওসমান গনি, কুমিল্লা প্রতিনিধি !! গত ৩০ডিসেম্বর/১৮ইং অনুষ্ঠিত দেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করছেন। পরপর তিনবার শপথ নেওয়ার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও অনন্য এক উচ্চতায় পৌঁছেছেন তিনি। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা, যা রেকর্ড। টানা ৩৮ বছর ধরে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে শেখ হাসিনা। নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার রেকর্ডও গড়তে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দশম জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষে শেখ হাসিনার ক্ষমতার মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে ১৫ বছর। চতুর্থ দফা পূর্ণ মেয়াদ শেষ করলে তা হবে ২০ বছর।

১৯৭৩-এর প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়সহ হিসাব করলে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে পঞ্চম মেয়াদে শাসনভারের দায়িত্ব পালন করছে। তার মধ্যে এবারই প্রথম তারা টানা তৃতীয়বারের মতো জয়লাভ করেছে। বাংলাদেশের কোনো দল হিসেবে হ্যাটট্রিক জয়ের ইতিহাসও গড়ল দলটি। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিহাসে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার রেকর্ডও করছেন শেখ হাসিনা। তার রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, জাদুকরি নেতৃত্বের সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক এ বিজয়কে।
১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ২৯৩ আসনে জয়লাভ করেছিল। সে সময়ে প্রধান বিরোধী পক্ষ জাসদ জিতেছিল মাত্র ১টি আসন। তৎকালীন জাতীয় লীগ নামে একটি রাজনৈতিক দল জিতেছিল ১ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জিতে ছিলেন ৫টি আসন। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা এবং অভাবিত গণসম্পৃক্ততার কাছে দাঁড়াতে পারেনি কোনো দল। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়কে অনেকে,৭৩-এর সেই প্রথম জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গেই তুলনা করেছেন অনেক নির্বাচন বিশ্লেষক। সেবার আওয়ামী লীগের ভোট ছিল ৯৭.৬৬ শতাংশ। ৪৫ বছর পর আওয়ামী লীগ এবার এককভাবে ভোট পেয়েছে প্রায় ৭৭ শতাংশ। মহাজোটগতভাবে এ ভোটের হার ৯০ শতাংশের কাছাকাছি।

ঐতিহাসিক এ বিজয়ের মধ্যে দিয়ে দেশ পরিচালনার জন্য সরকারের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, দলটির লক্ষ্য বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ১০ জানুয়ারি শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের। ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ের পরও ১০ জানুয়ারিকে ধরে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের চেষ্টা ছিল তাদের। কিন্তু হাতে পর্যাপ্ত সময় ও প্রস্তুতি না থাকায় সেটা সম্ভব হয়নি। তবে সময় ও প্রস্তুতি থাকার কারণে ১০ জানুয়ারি শপথগ্রহণের সম্ভাবনা প্রকট বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট অনেকে। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে নির্বাচনে বিজয় এবং বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মতো দিনে সরকার হিসেবে আওয়ামী লীগের শপথগ্রহণ ইতিহাসের নানা তাৎপর্যের সঙ্গে একীভূত হবে।
আওয়ামী লীগের এবারের বিজয়কে শুধু উন্নয়নের বিজয় হিসেবেই দেখছেন না। অনেকে মনে করছেন, এ বিজয় তারুণ্যের বিজয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িকতা, অর্থনৈতিক মুক্তি ও সমৃদ্ধির ধারায় অব্যাহত উন্নয়নের পক্ষেই মূলত, জনরায় এসেছে এবার। সংশ্লিষ্টদের মতে, ১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর আওয়ামী লীগ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল ঘাতক ও মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি। স্বৈরতন্ত্র, সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদকে আশ্রয় করে পাকিস্তানপন্থী শক্তি ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল ’৭৫-পরবর্তী সময়ে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার রহিতকরণসহ দেশ থেকে সুশাসন ও সুবিচারের সব প্রত্যয়কে মুছে দেওয়ার রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ চলেছিল টানা ২১ বছর। ১৯৯৬ এ আওয়ামী লীগের বিজয়ের মধ্য দিয়ে ফিরে এসেছিল মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ। ১৯৮১ সালে স্বদেশে ফিরে শেখ হাসিনা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নতুন রূপে নতুন শক্তিতে আবির্ভূত হতে থাকে আওয়ামী লীগ। স্বৈরতন্ত্র, সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ ও দেশবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে অকুতোভয় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রামের ফসলই ছিল ’৯৬-এর ১২ জুনের নির্বাচনে বিজয়। সেবার আওয়ামী লীগ জিতেছিল ১৪৬ আসন। তাদের ভোট ছিল ৩৭.৪৪ শতাংশ। আর বিএনপি জিতেছিল ১১৬ আসন। তাদের ভোট ছিল ৩৩.৬১ শতাংশ। স্বৈরাচার এরশাদের পতনের পর প্রথম নির্বাচনে (১৯৯১) বিএনপি জিতলেও আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ভোট ছিল প্রায় সমান। ১৪০ আসন জিতে সেবার বিএনপির ভোট ছিল ৩০.৮১ শতাংশ আর ৮৮ আসন জিতে আওয়ামী লীগের ভোট ছিল ৩০.০৮ শতাংশ। ২০০১-এ স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের সঙ্গে জোটবেঁধে বিএনপি ১৯৩ আসন জেতার পরও আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংকে কোনো ধরনের আঘাত করতে পারেনি। সেবার বিএনপির ভোট ছিল ৪০.৯৭ শতাংশ। আর ৬২ আসন জিতেও আওয়ামী লীগের ভোট ছিল ৪০.১৩ শতাংশ।

২০০১ থেকে ২০০৬-এ বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশে স্বাধীনতা বিরোধীদের চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রতিষ্ঠা, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদকে মদদদান, খালেদাপুত্র তারেক রহমানের হাওয়া ভবনের ইশারায় সীমাহীন দুর্নীতি, অর্থ লোপাটের প্রেক্ষাপটে ২০০৮-এর জাতীয় নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় লাভ করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট। এককভাবে ২৩০ আসন নিয়ে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ৪৯.০ শতাংশ ভোট। আর বিএনপি মাত্র ৩০ আসন পেয়েছিল সেবার। তাদের ভোটের হার কমে দাঁড়িয়েছিল ৩৩.২ শতাংশে। বিপরীতে আওয়ামী লীগের ভোট বেড়ে যায় আগের চেয়ে ৭ শতাংশ। মহাজোটগতভাবে এ সংখ্যা ন্যূনতম আরও ৮ শতাংশ বেড়ে যায়। বিশ্লেষকদের মতে, ক্রমাগতভাবে আওয়ামী লীগের ভোট বেড়েছে। আর কমেছে বিএনপি-জামায়াতের ভোট।

২০১৪-এর জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি না আসায় এক তরফায় পর্যবসিত হয় জাতীয় নির্বাচন। কিন্তু সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী, সেবার নির্দিষ্ট সময়েই নির্বাচন সম্পন্ন করে আওয়ামী লীগ। বিনা ভোটে আওয়ামী লীগ ১২৭ আসনসহ ২৩৫ আসন পেয়েছিল। আর বিনা ভোটে ২০ আসনসহ জাতীয় পার্টি পেয়েছিল ৩৪ আসন। অর্ধেকেরও বেশি ভোটার ভোটদান থেকে বঞ্চিত হওয়ার ১৪-এর নির্বাচনের শতকরা ভোটের হিসাব পাওয়া যায় না। তবে ২০১৪-এর নির্বাচন পূর্ব ও পরবর্তী সময়ে অবর্ণনীয় সহিংসতা, জ্বালাও-পোড়াও, মানুষ হত্যার ঘটনা বিএনপি-জামায়াত জোটের গ্রহণযোগ্যতা তলানীর পর্যায়ে ঠেকেছে বলে মনে করছেন দেশের সচেতনমহল। এ সময়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন, অর্থনৈতিক সূচকে ক্রমাগত এগিয়ে যাওয়া, বিশ্বপরিমণ্ডলে রোল মডেল হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান, উন্নয়নশীল দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার মতো যুগান্তকারী ঘটনাগুলো আওয়ামী লীগের প্রতি মানুষের নিরঙ্কুশ সমর্থন এনে দিয়েছে। আর জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিএনপি-জামায়াত।আওয়ামী লীগের উন্নয়নের এ চলমান ধারাকে অব্যাহত রাখতে হলে দেশের ও দেশের মানুষের জীবনমানের উন্নয়নের প্রতি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের আরও বেশী বেশী মনোনিবেশ করতে হবে।দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের প্রতি সাহায্য ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।দলের যত রকমের কোন্দল আছে তা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সমাধান করতে হবে।দেশের সকল পেশাশ্রেনির মানুষের সাহাযার্থে এগিয়ে আসতে হবে।


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয় প্রধান কার্যালয়

মারীয়া কমপ্লেক্স, কাশিপুর বাজার, বরিশাল ।

মোবাইলঃ ০১৭১৬৬০৫৯৭১, ০১৫১১০৩৬৮০৯,০১৯১১১৭০৮৮৪

মেইলঃ barishalerprohor.news.bd@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ
Web Design & Developed By
ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্ক

প্রতিষ্ঠাতা :
মোঃ নাছিম শরীফ


উপদেষ্টা: খালিদ মাহমুদ

মেইলঃ barishaler.prohor@yahoo.com
  • মোবাইলঃ ০১৭১১০৩৬৮০৯, ০১৯১৯০৩৬৮০৯
    • সম্পাদক ও প্রকাশক : নাজমুন নাহার
    • ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ মোঃ রাসেল আকন
    • নির্বাহী সম্পাদক: কাজী সজল
    • বার্তা প্রধানঃ মোঃ আল আমিন হোসেন
    ডেইলি বরিশালের প্রহর কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।