DailyBarishalerProhor.Com | logo

২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

উন্নয়নের মহাকাব্যে বাংলাদেশ

প্রকাশিত : জানুয়ারি ১৬, ২০১৯, ১২:১৩

উন্নয়নের মহাকাব্যে বাংলাদেশ

মো.ওসমান গনি!! বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতাপূর্ণ নেতৃত্বে সমগ্র জনগোষ্ঠী আজ ঐক্যবদ্ধ। বাংলাদেশ রূপান্তরিত হয়েছে উন্নয়নের এক মহাকাব্যে, যা আমাদের শেখাচ্ছে, লক্ষ্য অর্জনে দৃঢ় অঙ্গীকার, জাতীয় নেতৃত্বে বলিষ্ঠতা এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সমগ্র জনগোষ্ঠিকে উজ্জ্বীবিত করা। গত১০নভেম্বর/১৮ (শুক্রবার) সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ কন্সুলেট মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ উন্নয়ন মেলা’য় জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি ফেকিটেমোয়েলা কাটোয়া এ কথা বলেন।

“উন্নয়নের এ অবিশ্বাস্য ধারা অব্যাহত রাখতে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্থিতির বিকল্প নেই। দীর্ঘমেয়াদী ও টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে রাজনৈতিক স্থিতি। এ ব্যাপারে সকলকে আন্তরিকতার সাথে সজাগ থাকতে হবে।”

“প্রাইভেট সেক্টর, এনজিও এবং উদ্ভাবনী-উদ্যোক্তাদের সম্মিলিত প্রয়াসে বাংলাদেশ তার অভীষ্ঠ লক্ষ্যে এগুচ্ছে। অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদিত পণ্যের মূল্য যথাযথভাবে পাওয়া গেলে কল-কারখানার পাশাপাশি কৃষি ও পোশাক শিল্পে বিনিয়োগের আগ্রহ বাড়বে, যা ত্বরান্বিত করবে উন্নয়ন-প্রত্যাশাকে।”

বড় ধরনের কোন প্রকল্প গ্রহণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে ওঠেনি। এটা সম্ভব হয়েছে উন্নয়ন পরিক্রমায় সমগ্র জনগোষ্ঠিকে উদ্বুদ্ধ করার মধ্য দিয়ে। জনগণকে ক্ষমতায়িত করা, নারী ক্ষমতায়ন, শিক্ষা-স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি ইত্যাদির মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশের উন্নয়নের এই ধারাক্রম গোটাবিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

সীমিত সম্পদ নিয়ে জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতাপূর্ণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ দীপ্ত প্রত্যয়ে এগিয়ে চলছে। আর সবকিছুই সম্ভব হচ্ছে শান্তি ও সম্প্রীতির স্লোগানে সকলে উজ্জীবিত হওয়ায়।

বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠাতেও বাংলাদেশের সৈনিকেরা অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন। বাংলাদেশের মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে চলমান কার্যক্রম আজ আন্তর্জাতিক ফোরামেও সগৌরবে উচ্চারিত হচ্ছে। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের কিছু পরে হেনরি কিসিঞ্জার একবার বলেছিলেন বাংলাদেশ হলো ‘তলাবিহীন ঝুড়ি।’ যাই দাও না কেন ঝুড়ির তলা না থাকার কারণে সেখানে কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। সেই হেনরি কিসিঞ্জারও নেই, আগের তলাবিহীন ঝুড়ি বাংলাদেশও নেই। গোটাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বে এখন বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পথে রয়েছে। শিগগিরই গ্র্যাজুয়েশন করবে বাংলাদেশ।

 

বিগত দশ বছরে বাংলাদেশ উন্নয়নে অভূতপুর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। আজ সেই বড় বড় সাফল্যের একটা ছোটখাটো পোস্টমর্টেম করছি। বিশ্বব্যাংক ও এডিবির সাহায্য ছাড়া সম্পূর্ণ নিজস্ব অথার্য়নে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুর নির্মানকাজ। দৃশ্যমান হয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। শুরুতে সবাই বলাবলি করেছিল নিজ অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরি সম্ভব হবে না। কিন্তু সম্ভাবনার বাংলাদেশে এখন প্রায় সবকিছু সম্ভব। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকলে আগামী বছরের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হবে। উন্নয়নে বাংলাদেশের মাইলফলক হবে পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হলে দৌলতদিয়ায় তৈরি হবে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু। কয়েকদিন আগে উদ্বোধন হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট। এত বড় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপানসহ বিশ্বের আর কোথাও নেই এটা ভাবতেই গর্বে মাথা উঁচু হয়ে যায়। ৩০০ কোটি টাকার চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার কাজও শুরু হয়েছে। এসব অপ্রতিদ্বন্ধী উন্নয়নে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কয়েক মাস আগে বাংলাদেশ মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ পাঠিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ কখনো ভাবেনি বাংলাদেশ মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠাতে পারবে। অন্যান্য দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মহাকাশে আমরাও আমাদের অস্তিত্ব জানান দিয়েছি এটা ভাবলেই ভালো লাগে। বাংলাদেশের বিরাট অর্জন। জ্যাম কমানোর জন্য বিশ্বের বড় বড় শহরের মতো ঢাকা শহরের বুকেও তৈরি হচ্ছে মেট্রোরেল। মেট্রোরেলের কাজ শেষ হলে যখন ঝকঝক শব্দে মেট্রোরেল ছুটে বেড়াবে ঢাকা শহরের বুকে তখন কি আপনি পুলক অনুভব করবেন না? নিজের অজান্তে হলেও পুলক অনুভব করবেন। বাংলাদেশ দুটি সাবমেরিন কিনেছে কিছু দিন আগে। ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তিতে আমরা পেয়েছি প্রায় আরেকটি বাংলাদেশের সমান সমুদ্রসীমা। তাছাড়া শতবর্ষী বদ্বীপ পরিকল্পনায় সমুদ্র সম্পদ আহরণকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এখন সাবমেরিন দুটি সগৌরবে ঘুরে বেড়ায় বঙ্গোপসাগরে অতল জলে। বাংলাদেশের অর্জন সমুদ্রের অতল জল থেকে মহাকাশের ঊধ্বর্সীমা পযর্ন্ত। এসব দূরদর্শীর পরিকল্পনা এগিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশকে। ছিটমহল সমস্যা ছিল বাংলাদেশের গলার কাঁটা। গত তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে হাজার হাজার মানুষ ছিটমহলে নিষ্পেষিত হয়ে আসছিল। সেসব মানুষের সবকিছুই ছিল কিন্তু বাস্তবে কিছুই ছিল না। মুখ থুবড়ে পড়ে ছিল মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি। ছিটমহলবাসীর একটি স্বাধীন দেশের স্বপ্ন মলিন হতে শুরু করেছিল। কিন্তু এখন ছিটমহল সমস্যার সমাধান হয়েছে। মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। বাংলাদেশের মানচিত্র নতুন করে তৈরি হচ্ছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ চলমান। যেখান থেকে ২০২৪ সাল থেকে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। রাশিয়ার সহায়তায় রূপপুরে আরও ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রাথমিক কাজ শেষ হওয়ার পথে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব রোধে নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে যার মধ্যে ১৭টি সোলার পার্ক, ২টি উইন্ড পাওয়ার প্ল্যান্ট। বতর্মানে নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ৫১৮ মেগাওয়াট, সোলার হোম সিস্টেম ২১৮.৪৮ মেগাওয়াট, বায়ুচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র ২.৯০ মেগাওয়াট। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব রোধে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের রোল মডেল। বিদ্যুৎ গ্রাহকসংখ্যা ১ কোটি ৮ লাখ থেকে ২ কোটি ৯৯ লাখ হয়েছে। এখন দেশের ৯০ শতাংশ জনগোষ্ঠী বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। সবমিলিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট থেকে বেড়ে ১৮ হাজার ৭৫৩ মেগাওয়াট হয়েছে।

গ্যাস উত্তোলন বৃদ্ধি পেয়েছে। সদ্য আবিষ্কৃত ভোলা গ্যাস ক্ষেত্রসহ দেশের মোট গ্যাসক্ষেত্রের সংখ্যা ২৭টি। যার মধ্যে থেকে ২০টি থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। বর্তমানে দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ক্ষমতা ২ হাজার ৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুট।

দেশে মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি ও অ্যাভিয়েশন ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। যা বাংলাদেশের জন্য একটি সুদূরপ্রসারী ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় দুটি। মেডিকেল ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। নতুন করে আর কয়েকটি সরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। দারিদ্র্যের হার উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। দিন দিন জাতীয় প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সবকিছু স্বপ্নের মতো হয়। সেই বাংলাদেশ, এই বাংলাদেশ। সবকিছু পিছিয়ে উন্নয়নের মহাসড়কে দুবার্র গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের সবার প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশ। নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, মেট্রো-রেল, রামপাল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, পায়রা সমুদ্রবন্দর, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ও দোহাজারী-কক্সবাজার-গুনদুম রেললাইনের মতো মেগা প্রকল্পসহ বিশাল উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করছে সরকার। রাজধানীর দৃশ্যপট বদলে যাচ্ছে। বদলে যাচ্ছে গ্রাম। বিশ্বসভায় বাংলাদেশ এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক মহলে গুরুত্ব বেড়েছে বাংলাদেশের। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অভিবাসন, জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য, সামুদ্রিক অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান বেশ জোরালো। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় শেখ হাসিনার মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য তাকে মধ্যপ্রাচ্যের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক খালিজ টাইমস, ‘নিউ স্টার অব দ্য ইস্ট  পূর্বের নতুন তারকা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

ভারত ও মিয়ানমারের বিপক্ষে সমুদ্র বিজয়, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার, পোশাক রফতানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় হওয়া, জাতির জনকের ৭ মার্চের ভাষণের বিশ্ব স্বীকৃতি, উদ্যোক্ততাশূন্য বাংলাদেশে এখন লাখো উদ্যোক্তা তৈরি হওয়াসহ সামগ্রিক আমদানি ও রফতানিতে দেশ এগিয়ে চলছে। এক সময়কার আমদানি  নির্ভর বাংলাদেশ এখন আমদানির বিকল্প পণ্যের শিল্প-কারখানা গড়ে তুলেছে। খাদ্য উৎপাদনে বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলোর কাতারে দেশের নাম লিখিয়েছেন আমাদের দেশের কৃষকরা। সবকিছুকে পিছিয়ে উঠে রোহিঙ্গা সংকট, যা একটি বৈশ্বিক রূপ নিয়ে বাংলাদেশকে এক অভাবনীয় কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে। সীমান্ত খুলে দিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার মাধ্যমে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছে বাংলাদেশ, মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে।

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে থাকলেও  রাজনীতিতে বিরাজ করছে অস্বস্তি। এ অস্বস্তির বাতাবরণ দূর না করায় সরকারই সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছে। চতুর্থ বছরে সরকারকে মোকাবিলা করতে না হলেও বেশ কিছু ঘটনা ও পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারকে বেগ পেতে হয়েছে। নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে না পারায় সমালোচনার শিকার হতে হয়।

চতুর্থ বছর সরকারের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ ছিল রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা করা। কম সময়ে এত শারণার্থী আশ্রয় নেওয়ার বিষয়টি মোকাবিলা করার অভিজ্ঞতা অন্য দেশের নেই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ বিষয়েও সফলতা দেখায় সরকার। প্রাথমিকভাবে আশ্রয় ও খাদ্যের ব্যবস্থা হলেও তাদেরকে ফেরত পাঠানোর  চ্যালেঞ্জ এখনো সরকার কাটিয়ে উঠতে পারেনি। তবে শুরু থেকে সরকার রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করে। যার ফলে সারা বিশ্বে এ নির্যাতনের ঘটনায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ধিক্কার উচ্চারিত হয় ও রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কণ্ঠ সোচ্চার হয়। শেখ হাসিনার কূটনৈতিক সাফল্যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রায় পুরো বিশ্ব আজ বাংলাদেশের পক্ষে।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর সরকারের যাত্রার শুরুতে পাশে ছিল শুধু ভারত। ফলে সরকারের পক্ষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার স্বীকৃতি আদায় ছিল সে বছরের প্রথম মাসগুলোতে কূটনীতিকদের প্রধান কাজ। মেয়াদের শেষ বছরে এসে দেখা যাচ্ছে, বৃহৎ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ শক্তিগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টাই কূটনৈতিক অঙ্গনে সরকারের অন্যতম প্রধান কৌশল হয়ে উঠেছে।

ভারত, চীন, রাশিয়া ও জাপানের মতো অর্থনৈতিক শক্তিগুলো সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করেছে। বাংলাদেশ চীনের ‘এক অঞ্চল ও এক পথ’ আর জাপানের ‘বিগ বি’র মতো বৃহদায়তন উদ্যোগে যুক্ত হয়েছে। বৈশ্বিক শক্তিগুলোর সঙ্গে যুক্ততার অংশ হিসেবে মধ্যপ্রাচ্য, বিশেষ করে সৌদি আরবের সঙ্গে নতুনভাবে সম্পর্ক  সম্প্রসারিত করেছে বাংলাদেশ। ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে  গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈতরণী ২০১৭ সালে সফলভাবে পার হয়েছে সরকার।

২০১৬ সালের শুরু থেকে অবৈধ বাংলাদেশিদের ফেরানোর জন্য চাপ ছিল। বাংলাদেশকে চুক্তি করতে খসড়া দিলেও প্রায় দেড় বছর নানাভাবে তা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। শেষ পর্যন্ত সেপ্টেম্বরে চুক্তিটি সই করে বাংলাদেশ। তবে এতে বাংলাদেশ এটা নিশ্চিত করেছে যে ফিরে আসা লোকজনের পুনর্বাসনে উন্নয়ন সহায়তা  দেবে ইইউ।

ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পরপর ইউরোপীয় পার্লামেন্টের দুই প্রস্তাবকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে বাংলাদেশ। কারণ, ওই প্রস্তাব দুটিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার ও জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে ইউরোপের অবস্থান স্পষ্ট করা হয়েছে। ব্রাসেলসে ইইউ সদর দফতর এবং স্ত্রাসবুর্গে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে নিবিড় যোগাযোগের ফলে এটা সম্ভব হয়েছে বলে কূটনীতিকরা মনে করেন। মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্কে একধরনের গুণগত পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ।

গত বছর সরকারের বৃহৎ দুইটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে দৃশ্যমান সফলতা আসে। বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে শুরু করা পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যানটি স্থাপনের মধ্য দিয়ে নির্মাণকাজ পুরোপুরি দৃশ্যমান হয় গত ১ অক্টোবর। এ ছাড়া গত ১ ডিসেম্বর দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের মূল পর্বের কাজটি শুরু হয়।

২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির (জিডিপি) হার ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ, বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ ৩২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার ও রফতানির পরিমাণ ৩৮ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬১০ ডলার। এ সময়ে মুদ্রাস্ফীতি বিগত ৫৩ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন ডিসেম্বরে  দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। দারিদ্র্য হার ৫৭ শতাংশ থেকে কমে  দাঁড়িয়েছে ২২ শতাংশ। মানুষের গড় আয়ু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ বছর। সরকার সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি সম্প্রসারণ ও তাতে অর্থ সহায়তা বৃদ্ধি করায় ৫৭ লাখ ৬৭ হাজার মানুষের দারিদ্র্য থেকে মুক্তিলাভ সহজ হয়েছে।

সরকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, কূটনীতি, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুত্তি, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতসহ বিভিন্ন খাতের উন্নয়নে বেশ সাফল্য অর্জন করে বলে মনে করছেন সরকার সংশ্লিষ্টরা।

 

 

 


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয় প্রধান কার্যালয়

মারীয়া কমপ্লেক্স, কাশিপুর বাজার, বরিশাল ।

মোবাইলঃ ০১৭১৬৬০৫৯৭১, ০১৫১১০৩৬৮০৯,০১৯১১১৭০৮৮৪

মেইলঃ barishalerprohor.news.bd@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ
Web Design & Developed By
ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্ক

প্রতিষ্ঠাতা :
মোঃ নাছিম শরীফ


উপদেষ্টা: খালিদ মাহমুদ

মেইলঃ barishaler.prohor@yahoo.com
  • মোবাইলঃ ০১৭১১০৩৬৮০৯, ০১৯১৯০৩৬৮০৯
    • সম্পাদক ও প্রকাশক : নাজমুন নাহার
    • ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ মোঃ রাসেল আকন
    • নির্বাহী সম্পাদক: কাজী সজল
    • বার্তা প্রধানঃ মোঃ আল আমিন হোসেন
    ডেইলি বরিশালের প্রহর কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।