DailyBarishalerProhor.Com | logo

১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

অগ্নিকান্ড ! কর্তৃপক্ষের বোধদয় হবে হবে কি?

প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৯, ২০:৪৬

অগ্নিকান্ড ! কর্তৃপক্ষের বোধদয় হবে হবে কি?

মোঃ ওসমান গনি কুমিল্লা প্রতিনিধি || ২০১০সালের ৩ জুনের ঢাকার নিমতলীর ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পর ভয়াবহ চকবাজার ট্র্যাজেডি আবার দেশ-বিদেশকে শোকে ভাসিয়ে গেল। একটি গাড়ির ধাক্কায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে পাশে থাকা কেমিক্যালের গুদামে আগুন লেগে যায়। মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়া সেই ভয়াবহ আগুনে নারী, শিশু বৃদ্ধসহ নানা বয়সী অসংখ্য জীবন্ত প্রাণ দগ্ধ হয়ে ছটফট করতে করতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।সরু গলি, অপরিকল্পিত ভবন, তীব্র যানজট, ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা, জলাশয়ের অভাব, একই ভবনে বসতি, খাবার হোটেল, কোচিং-ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কেমিক্যাল, প্লাস্টিক ও পারফিউমের গোডাউন থেকে কত কিছু যে আছে তা বলে শেষ করা যাবে না। অনেক বাড়িতে কাগজ ও দাহ্য পদার্থের ভাড়াটিয়া বেশি। গড়ে তোলছে ইচ্ছামতো শিল্প কারখানা। অবৈধ গ্যাস ও বিদ্যুত সংযোগ। এটি গোটা পুরান ঢাকার চিত্র। যেখানে আবাসিক, বাণিজ্যিক শিল্প এলাকা বলতে কিছু নেই। সবই একই রকম! রাজধানী শহরের একটি বড় অংশ যদি এরকম হয় তাহলে সহজেই অনুমান করা যায় এলাকাটি কতটা বিপজ্জনক! সত্যিই তাই। পুরান ঢাকাকে কেউ বলেন মৃত্যুপুরী। কারো কারো বক্তব্য ফুটন্ত লাভা। ২০১০ সালে নিমতলী ট্র্যাজেডিতে শতাধিক মানুষের মৃত্যুর পর বুধবার রাতে চকবাজারের চুড়িহাট্টার অগ্নিকান্ডে ৭০ জনের প্রাণ নিভার ঘটনা ফের স্মরণ করিয়ে দিল পুরান ঢাকা কতটা বিপজ্জনক! বিশেষজ্ঞদের মতে, তদারকির অভাবেই চোখের সামনে পুরান ঢাকা মৃত্যুপুরী হয়ে উঠেছে। কেউ কখনও এ নিয়ে চিন্তা করেননি। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সরাতে কত কিছুই না হলো। পরিবর্তন আসেনি। নিরাপদ ‘পুরান ঢাকা’ গড়ে তুলতেও অনেক মতামত, তদন্ত রিপোর্ট হয়েছে। বাস্তবায়ন হয়নি। তাই ভবিষ্যতে অগ্নিকান্ড বা ভবন ধসের মতো দুর্ঘটনা ঘটলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কার করছে বিষেজ্ঞরা। চকবাজারের চুড়িহাট্টা এলাকাটি মূলত প্রসাধনী ও প্লাস্টিক পণ্য তৈরির কাঁচামাল বেচাকেনার কেন্দ্র। আছে অনুমোদনহীন কেমিক্যালের গোডাউন। এই এলাকায় প্রচুর নকল প্রসাধনী বিক্রির অভিযোগও রয়েছে। সারাদেশ থেকেই ব্যবসায়ীরা এখানে পাইকারি দরে প্রসাধনী কিনতে আসেন। চুড়িহাট্টা মসজিদের উল্টো দিকের বাড়িটির ভূগর্ভস্থ তলাসহ একতলা ও দোতলায় গড়ে তোলা হয়েছিল সুগন্ধির বিশাল মজুত। ওই বাড়ির সামনে এসে মিলেছে চারটি সরু গলি। রাত সাড়ে ১০টার দিকে আগুন লাগার সময় ওই গলির মোড়টি ছিল মানুষ, গাড়ি, মোটরসাইকেল আর রিক্সা দিয়ে কানায় কানায় পরিপূর্ণ। যানজটের কারণে থমকে ছিল সব। এটা শুধু চকবাজারের চিত্র নয়। পুরান ঢাকার অলি গলির প্রতিটি এলাকার দৃশ্য খুবই কাছাকাছি। সব মিলিয়ে গোটা এলাকা বারোয়ারি মৃত্যুর নরক। পুরান ঢাকা যেন মৃত্যুফাঁদে রূপ নিয়েছে। যত চোখ যাবে তত ভেসে উঠবে কিভাবে মৃত্যুপুরি করে গড়ে তোলা হয়েছে এক সময়ের গর্বের এই অঞ্চলটিকে। ফায়ার সার্ভিস ও সিটি কর্পোরেশন সূত্রমতে, পুরান ঢাকার আরমানিটোলা, চাঁদনিচক, নিমতলী, নাজিমউদ্দিন রোড, সুরিটোলা, বাবুবাজার, মিটফোর্ড, লালবাগসহ আশপাশের এলাকা মিলিয়ে চার শতাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে। কেমিক্যাল রাখার কারণে এসব ভবন ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হয়। আবার নির্মাণ ত্রুটি ও মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণেও পুরান ঢাকার মেয়াদোত্তীর্ণ ভবনের কোন অন্ত নেই। সরেজমিন গিয়ে দেখলে চোখের সামনেই ধরা পরবে গোটা পরিবেশ। যে কেউ এক নজর পুরান ঢাকার অলি গলি দিয়ে হেঁটে গেলে বোঝতে পারবেন এটি আর স্বাস্থ্যসম্মত এলাকা নয়। প্রতিটি মিনিটে পাওয়া যাবে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ কিভাবে মৃত্যুর হাতছানি দিচ্ছে। বিস্ফোরণের শব্দের পরপরই পুরো এলাকায় বিদ্যুত চলে যায়। অন্ধকারে সবাই ছোটাছুটি শুরু করেন। ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হলে তারা সঠিক সময়েই আসে। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যথেষ্ট রাস্তা না থাকায় ঘটনাস্থলের কাছে আসতে পারছিল না। সরু গলি দিয়ে গাড়ি প্রবেশে বেশ বেগ পেতে হয়। প্লাস্টিক কারখানায় দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন লাফিয়ে বাড়তে থাকে। ভবনের ভেতর থেকে মানুষ চিৎকার করতে থাকেন। চারপাশের মানুষের আহাজারিতে চকবাজারের বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। এলাকায় ছোটখাটো অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলেও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ইচ্ছে করলেই আসতে পারে না। দিনের বেলা তো আরও বেশি জটিলতা। সব সড়কেই থাকে গাড়ি আর মানুষের জটলা। ব্যবসা বাণিজ্যে রাত-দিন মুখর থাকে পুরো এলাকা। এখানে নিরাপদ বাসস্থান নিয়ে কারো কোন ভাবনা নেই। কারণ মানুষের জীবনের কোন দাম নেই। তাই কেউ সাধারণ মানুষদের নিয়ে ভাবে না। গত ১৯ফেব্রুয়ারী(বুধবার) রাত সাড়ে ১০টার পর চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের সামনে একটি পিকআপের সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আশপাশের আরও পাঁচটি ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট ১৫ ঘণ্টার বেশি কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা ৭০টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। এ ঘটনার পর আবারও পুরান ঢাকার মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা চলছে। নিমতলীর ট্র্যাজেডির পর বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ বাস্তবায়ন না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোকে দোষারোপ করছেন স্থানীয় মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সেক্টরের দায়িত্বশীলরা। ২০১০ সালের ৩ জুনের বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যায় রাসায়নিকের আগুনে জ্বলে উঠেছিল নিমতলী। যাতে প্রাণ হারান ১২৪ জন। মুহূর্তেই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। সেদিনের সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা আর আগুনের লেলিহান শিখা এখনও ভুলতে পারেনি এলাকার মানুষ। সেই ধ্বংসযজ্ঞ, লাশের মিছিল কোনভাবেই মন থেকে সরেনি। নয় বছর আগের আতঙ্ক এখনও তাড়া করে ফেরে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এটা সত্যি আতঙ্কের মধ্যেই বসবাস ছিল এলাকার মানুষের। এর বড় কারণ হলো নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত না হওয়া। সেদিন চোখের সামনে তাজা প্রাণগুলো পুড়ে কয়লা হয়েছিল। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে চারদিকে পড়ে ছিল লাশগুলো। ঘিঞ্জি অলিগলির ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় রাসায়নিক ব্যবসা বা শিল্পকারখানা কতটা বিপজ্জনক, প্রায় নয় বছর আগে তা দেখেছে মানুষ। কিন্তু শিক্ষা হয়নি। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনার পর তালিকা করে ৮০০ রাসায়নিক গুদাম ও কারখানা পুরান ঢাকা থেকে কেরানীগঞ্জে সরিয়ে নেয়ার


যোগাযোগ

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যলয় প্রধান কার্যালয়

মারীয়া কমপ্লেক্স, কাশিপুর বাজার, বরিশাল ।

মোবাইলঃ ০১৭১৬৬০৫৯৭১, ০১৫১১০৩৬৮০৯,০১৯১১১৭০৮৮৪

মেইলঃ barishalerprohor.news.bd@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ
Web Design & Developed By
ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্ক

প্রতিষ্ঠাতা :
মোঃ নাছিম শরীফ


উপদেষ্টা: খালিদ মাহমুদ

মেইলঃ barishaler.prohor@yahoo.com
  • মোবাইলঃ ০১৭১১০৩৬৮০৯, ০১৯১৯০৩৬৮০৯
    • সম্পাদক ও প্রকাশক : নাজমুন নাহার
    • ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ মোঃ রাসেল আকন
    • নির্বাহী সম্পাদক: কাজী সজল
    • বার্তা প্রধানঃ মোঃ আল আমিন হোসেন
    ডেইলি বরিশালের প্রহর কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি।