ঝালকাঠি প্রতিনিধি: ঝালকাঠি উপজেলা সদরের সঙ্গে শেখেরহাট ইউনিয়নের একমাত্র প্রবেশ পথ ঝালকাঠি-শেখেরহাট সড়কটি গাবখান (খাল) চ্যানেলের ভাঙনে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ ছয় কিলোমিটারের এই সড়কটি সংস্কারের জন্য বরাদ্দ পেলেও ভাঙনের জন্য তা কাজে লাগাতে পারছে না। গাবখান চ্যানেলের তীর সংলগ্ন সড়কটি প্রতিদিন ভাঙনের পাশাপাশি খানা-খন্দের সৃষ্টি হচ্ছে।
প্রায় ১০ বছর ধরে সঠিকভাবে সংস্কার না হওয়ায় সড়কের পিচ উঠে আগেই খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যানবহনগুলো যাত্রীদের নিয়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। গাবখান নৌ রুটের ভারী ও মালবাহী জাহাজ চলাচল করায় পানির স্রোতে সড়কের মাটি গাছসহ ভেঙে পড়ছে প্রতিদিন।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ঝালকাঠি-শেখেরহাট সড়কটি গাবখান চ্যানেলের ভাঙনের কবলে পড়ে নিশ্চিহ্ন হতে চলেছে। অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের মালিকানাধীন জায়গার ওপর নির্মিত এ সড়কের রক্ষাণাবেক্ষণ করছে এলজিইডি। গাবখান চ্যানেল দিয়ে ভারী নৌযান চলাচল করায় পানির ঢেউ সড়কটিতে আঘাত হানলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে ঝালকাঠি থেকে শেখেরহাট হয়ে পিরোজপুরের কাউখালী, আমিরাবাদ, স্বরুপকাঠি, বেকুটিয়া থেকে পিরোজপুরে অল্প সময়ে যাতায়াত যেত। কিন্তু বেহাল দশার কারণে এসব রুটের অধিকাংশ চলাচল করতে পারছে না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঝালকাঠি-শেখেরহাট সড়কের গাবখান, সারেঙ্গল, মীর্জাপুর, রাজপাশা, শিরযুগ অংশের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে সড়কের বিভিন্ন অংশ সংকীর্ণ হয়ে পড়ায় যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এভাবে বেশি দিন অব্যহত থাকলে এ পথে যান চলাচল বন্ধ হবার উপক্রম হয়ে পড়বে।
শিরযুগ এলাকার ইজিবাইক চালক আবুল হোসেন বলেন, এ সড়কটি হয়ে বেকুটিয়া ফেরি ঘাট পর্যন্ত যেতে সময় লাগে মাত্র ৩০ মিনিট। অথচ ঝালকাঠি থেকে বেকুটিয়া যেতে প্রায় দেড় ঘণ্টা লাগে। কিন্তু নদী ভাঙনে বিলীন হওয়ায় এ পথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
গাবখান বাজারের ব্যবসায়ী আবদুস সালাম বলেন, প্রতিদিন সড়কের বিভিন্ন অংশের জায়গা নিয়ে অনেক গাছ গাবখান নদীতে ভেঙে পড়ছে। সড়কের অনেক অংশে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও সড়কের নিচের মাটি সরে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ পথে জেলা শহর থেকে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহনে ব্যবসায়ীদের মালামাল আনতে হয়।
সারেঙ্গল এলাকার কলেজ ছাত্র মাইনুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন এ পথে ঝুঁকি নিয়ে এ এলাকার ছাত্রছাত্রীরা ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজ ও সরকারি কলেজে যাতায়াত করে।
এ বিষয়ে ঝালকাঠি স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রুহুল আমিন জানান, সড়কটি প্রতিদিন নদীতে ভেঙে যাওয়ায় এ সড়কটি টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। গাবখান চ্যানেল দিয়ে ভারী নৌযান চলাচলে পানির স্রোতে সড়কটি নদীতে বিলীন হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সড়কটি রক্ষায় ভাঙন প্রতিরোধে আগে ব্যবস্থা না নিলে বন্যা প্রকল্পের বরাদ্দের তিন কোটি টাকা কাজে লাগছে না। তবে এ বিষয়ে ঝালকাঠি-২ আসনের সাংসদ আমির হোসেন আমুর মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবগত করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
এ প্রসঙ্গে ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম আতাউর রহমান বলেন, আমাকে এলজিইডি এ বিষেয়ে অবগত না করলেও ইতোমধ্যেই আমি এই সড়কের ৩৭শ মিটার ভাঙন রোধের প্রস্তাব পাঠিয়েছি পানি উন্নয়ন বোর্ডে। যা বিবেচনায় আছে। স্থায়ী নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় এ কাজ করা হবে। তবে এই সড়কটি চালু রাখতে হলে বর্তমান ভাঙা সড়কের ভেতর থেকে নতুন করে জমি অধিগ্রহণ করে নতুন সড়কের জন্য এলজিইডিকে উদ্যোগ নেওয়া উচিত। তাহলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভাঙন প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়ার পর নতুন সড়কটি টেকসই হবে।
‘ঘুষ দুর্নীতির প্রমান পেলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না —বিভাগীয় কমিশনার আমিন উল আহসান’
প্রতিষ্ঠাতা: আল আমিন,বাবুগঞ্জ(বরিশাল)প্রতিনিধি ॥ বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের সকল দপ্তরের কর্মকর্তা-......বিস্তারিত