ঃ হত্যার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ক্লুলেস রহস্য উন্মোচন করলো বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। নগরীর ২৯ নং ওয়ার্ডের কাশিপুর শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত ট্রাক টার্মিনালে পিকআপ ভ্যান চালক উজ্জল হত্যার ঘটনায় ঘাতকদের আটক করে আজ বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলন করেন বিএমপির কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান।তিনি জানান, চুরির টাকা ভাগবাটোয়ারা নিয়ে কোন্দলের শুরু। আর মাত্র ৩০০ টাকার হিসেব নিয়ে খুন হন উজ্জল। এ ঘটনায় মূল ঘাতক ট্রাক টার্মিনালের সাব-কন্ট্রাকটর সোহাগ ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মূল কন্ট্রাকটর স্বপনের কাছ থেকে সাব কন্ট্রাকে নিয়ে শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত ট্রাক টার্মিনালের কাজ করতো আলেকান্দার বাসিন্দা সোহাগ। এছাড়াও নিহত উজ্জল, রমজান ও রেজাউল একসাথে চলাফেরা করতো। এরা ট্রাক টার্মিনালের রড, সিমেন্ট, পাথর ও অন্যান্য মালামাল বিভিন্ন সময়ে সোহাগের নেতৃত্বে চুরি করে উজ্জলের পিকআপ ভ্যানে করে বিক্রি করতো। এমন চুরির ব্যবসা দীর্ঘদিন চলে আসছিল।
এরমধ্যে ভাড়া বাবদ ১৫০০ টাকা উজ্জলের কাছে ঋণি হয় সোহাগ। যদিও তার মধ্যে ১২০০ টাকা পরিশোধ করে। বাকি ৩০০ টাকা পাওনা থাকায় বিভিন্ন সময় চাইলেও ফেরত দেয় না সোহাগ। কয়েকমাস এই টাকা নিয়ে ঘুরালে ক্ষিপ্ত হয়ে কন্ট্রাকটর স্বপনের কাছে চুরির বিষয়টি ফাঁস করে দেন
উজ্জল। এমন তথ্য জানতে পেরে কন্ট্রাকটর স্বপন সাব কন্ট্রাকর সোহাগের ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ফেরত না দেওয়ার কথা জানিয়ে দেন। এতে পিকআপ চালক উজ্জলের ওপর ক্ষুব্ধ হন সোহাগ।
পরিকল্পনা করেন উজ্জলকে হত্যার। পরিকল্পনা অনুযায়ী আগে দুইবার টাইগারের মধ্যে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। কিন্তু তাত মারা যান না উজ্জল দেখে নিজ হাতে খুনের সিদ্ধান্ত নেন। তারই ধারাবাহিকতায় ১ আগস্ট রাত আনুমানিক ৯টার দিকে মোবাইলে উজ্জলকে শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত ট্রাক টার্মিনালের নির্মানাধীন ভবনের দ্বিতীয় তলায় ডেকে নেয় সোহাগ। সেখানে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সোহাগের সহযোগী টার্মিনালের শ্রমিক রবিউল ও ট্রাক হেলপার রমজান ছিল। উজ্জল যাওয়ায় তাকে চেয়ারে বসিয়ে কথা বলতে থাকে রমজান ও রবিউল।
এসময়ে পিছন দিক থেকে এসে ছোরা দিয়ে গলায় পোচ দেয় সোহাগ। এতে উজ্জল মাটিতে লুটিয়ে পরে। তখন রমজান ও রবিউল গলাকাটা উজ্জলের মাথা ও পা চেপে ধরে। ওদিকে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ছোরা দিয়ে গলা কাটতে থাকে সোহাগ। মৃত্যু নিশ্চিত হলে সোহাগ আলেকান্দা বাসায় চলে আসে। সেখান থেকে রক্তমাখা জামাকাপড় পাল্টে আবার ফিরে যায় শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত ট্রাক টার্মিনালে। সেখানে সোহাগের নির্দেশনা অনুযায়ী বালু খুড়ে গর্ত করে রাখে রমজান ও রবিউল। সোহাগ গিয়ে তিনজনে মিলে তাদের ব্যবহৃত একটি কাঁথা মুড়িয়ে নিহত উজ্জলকে মাটিচাপা দিয়ে পালিয়ে যায়।
পরের দিন ছেলের কোন খোঁজ না পেয়ে শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত ট্রাক টার্মিনালে আসেন উজ্জলের মা পারভীন বেগম। তিনি বালুর উপরে উজ্জলের একটি জুতা পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে বালু চাপা উজ্জলের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ২ আগস্ট অজ্ঞাতদের আসামী করে থানায় মামলা করেন পারভীন বেগম। মামলার সূত্র ধরে তদন্তে নেমে প্রথমে আলেকান্দা বাসা থেকে সোহাগকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্য মতে পলায়নরত রমজান ও রবিউলকে ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে গ্রেফতার করে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত সোহাগ মঠবাড়িয়া উপজেলার ফুলঝুড়ি গ্রামের জালাল হাওলাদারের ছেলে। ওদিকে রমজান ও রবিউলের পরিচয় জানানো হয়নি।
‘ঘুষ দুর্নীতির প্রমান পেলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না —বিভাগীয় কমিশনার আমিন উল আহসান’
প্রতিষ্ঠাতা: আল আমিন,বাবুগঞ্জ(বরিশাল)প্রতিনিধি ॥ বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের সকল দপ্তরের কর্মকর্তা-......বিস্তারিত